ভূমি ক্রয়ের ক্ষেত্রে আমাদের কি কি বিষয় জেনে নেওয়া ভালো……
আমার নিজের একখণ্ড জমি থাকবে, একটা বাড়ী করবো….. এমন স্বপ্ন কার না থাকে!! অনেকে তো সারাজীবনের সঞ্চয় ব্যয় করেন সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে………। তবে প্রায়ই জমি কেনা–বেচার ক্ষেত্রে নানা ধরনের জটিলতার কথা, কাগজ জালিয়াতির ঘটনা শোনা যায়…….। যার…ফলে ভোগান্তির পাশাপাশি সর্বস্ব হারান অনেকেই।
***জমি কেনারপূর্বে কী কী যাচাই করতে হবে***
- জমি কেনার আগে অবশ্যই আপনাকে কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে বিক্রেতার মালিকানা এবং জমির বিভিন্ন দলিল ভালোভাবে যাচাইবাছাই করতে হবে; নইলে পড়তে পারেন বিপদে, এমনকি প্রতারিতও হতে পারেন। জমির দলিলপত্র যাচাই না করে জমি কেনা উচিত নয়।
১. জরিপের মাধ্যমে প্রণীত রেকর্ড অর্থাৎ খতিয়ান ও নকশা যাচাই করতে হবে।
২. জমির তফসিল অর্থাৎ জমির মৌজা, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর উক্ত দাগে জমির মোট
পরিমাণ জানতে হবে।
৩. প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সিএস; এসএ; আরএস পরচা দেখাতে হবে।
৪. বিক্রেতা ক্রয়সূত্রে ভূমির মালিক হয়ে থাকলে তার ক্রয় দলিল বা ভায়া দলিল রেকর্ডের
সঙ্গে মিল করে বিক্রেতার মালিকানা নিশ্চিত হতে হবে।
৫. বিক্রেতা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হলে সর্বশেষ জরিপের খতিয়ান বিক্রেতা বা তিনি যাঁর
মাধ্যমে প্রাপ্ত তাঁর নামে অস্তিত্ব (যোগসূত্র) মিলিয়ে দেখতে হবে।
৬. জরিপ চলমান এলাকায় বিক্রেতার কাছে রক্ষিত মাঠ পরচা যাচাই করে দেখতে হবে।
৭. উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রেতার শরিকদের সঙ্গে বিক্রেতার সম্পত্তি
ভাগাভাগির বণ্টননামা (ফরায়েজ) দেখে নিতে হবে।
৮. বিক্রেতার কাছ থেকে সংগৃহীত দলিল, খতিয়ান/পরচা ইত্যাদি কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট ভূমি
অফিসে গিয়ে তলবকারী /স্বত্বলিপি রেজিস্টারের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে।
৯. সর্বশেষ নামজারি পরচা ডিসিআর খাজনা দাখিল (রসিদ) যাচাই করে দেখতে হবে।
জমির খাজনা বকেয়া থাকলে এবং বকেয়া খাজনাসহ জমি ক্রয় করলে বকেয়া খাজনা
পরিশোধের দায় ক্রেতার।
১০. বিবেচ্য জমিটি সার্টিফিকেট মোকদ্দমা ভুক্ত কি না, কখনো নিলাম হয়েছে কি না, তা
তহশিল অফিস / উপজেলা ভূমি অফিস থেকে জেনে নিতে হবে। সার্টিফিকেট
মামলাভুক্ত সম্পত্তি বিক্রয়যোগ্য নয়।
১১. বিবেচ্য ভূমি খাস, পরিত্যক্ত/অর্পিত, অধিগ্রহণকৃত বা অধিগ্রহণের জন্য নোটিশকৃত
কি না, তা তহশিল, উপজেলা ভূমি অফিস বা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের এল এ
শাখা থেকে জেনে নিতে হবে।
১২. বিবেচ্য ভূমি কোনো আদালতে মামলা–মোকদ্দমাভুক্ত কি না, তা জেনে নিতে হবে।
মামলাভুক্ত জমি কেনা উচিত নয়।
১৩. বিবেচ্য জমিটি সরেজমিনে যাচাই করে এর অবস্থান নকশার সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে
হবে এবং দখল সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে বিক্রেতার মালিকানা ও দখল নিশ্চিত হতে
হবে।
১৪. সাব–রেজিস্ট্রারের অফিসে তল্লাশি দিয়ে জমির সর্বশেষ বেচাকেনার তথ্য জেনে
নেওয়া যেতে পারে।
১৫. প্রস্তাবিত জমিটি ঋণের দায়ে কোনো ব্যাংক /সংস্থার কাছে দায়বদ্ধ কি না।
১৬. প্রস্তাবিত জমিতে যাতায়াতের রাস্তা আছে কি না, তা–ও দেখা প্রয়োজন।